মরণ ডাকে বুঝি-



আব্দুর রহিম গতকাল রাতে স্বপ্ন দেখল তার মৃতবাবা তার সামনে দাড়িয়ে তাকে ডাকছে -
সকালে এ কথা তার মাকে বললে এটাকে মরণের আভাস বলে উত্তর পায় মায়ের পক্ষ থেকে। এমন কথা আমার আশপাশের প্রায় সবাই বিশ্বাস করে - স্বপ্নে যদি কোন মৃত ব্যক্তিতে দেখা যায় বা তিনি কাউকে ডাকছেন এমন তাহলে এটাকে মৃত্যুর আগাম বার্তা বলেই সকলে চালিয়ে দিতে মজা পায়। একবার আমার সাথেও ঘটছিল - রাত তখন তিনটে পাচ মিনিট, ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাস হবে যতটুকু মনে পরে। হঠাৎ করে দেখি কে বা কারা আমার বাপের মৃতদেহ আনছেন। জেনে রাখা ভাল - তখন রেগুলার নামাজী ছিলাম, তাহাজ্জুদও পরতাম সুযোগ হলেই। এমন ঘটনার পর নাকের পানি, চোখের পানি সব এক করে চুপচাপ মসজিদে গিয়ে দুই রাকাআত নামাজ আদায় করে ঘরে ফিরে দেখি আমার বাপ দিব্যি ঘুমাচ্ছে। আমিও যে এ বিশ্বাসে বিশ্বাসী সেটাই বুঝাতে চেয়েছিলাম। এর কিছুদিন বাদেই আমার বাবা মারা যান (আল্লাহ তাকে উত্তম প্রতিদান দিক)। 

এরপর গুনতে গুনতে দুইবছর - আমার আবার কেন যেন মন খারাপের রোগ শুরু হওয়াতে বাড়ি এসে যাই - এসেই দেখি আমার নানা মারাত্বক অসুস্হ এবং তার পাচঘন্টা পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করে। শবদাহ বা দাফন বা দাহ এসব বলতে গেলে বিরক্ত হবেন ভয়ে মুল কথায় আসি - 

আগের দুইটা কথা বলার পেছনে কারন আছে যথেষ্ট - 
১) মৃত ব্যক্তি (আমার নানা) ডাকলে সেটা আমার মরনের সিগনাল।
২) আমার নানা যে মৃত তার একটা ফিরিস্তি। 

যুগ তো পাল্টাইছে - সব কিছুই যখন ডিজিটাল তখন মৃতব্যক্তিরাও ডিজিটাল হতে কতক্ষণ! আমার নানা মরহুম মোসলেহউদ্দীন সাহেব ওরপে কালা স্যার শেষ বয়সে এসে একটা নকিয়া সেটই চালানোর সুযোগ পেয়েছে। কে জানে - রহমান যদি করুনা করে তাকে ফেসবুক চালানোর সুযোগ দেয় তাতে তো আমার আর আপনার সমস্যা হওয়ার কথা না। মানলাম ফেসবুক দিছে তবুও প্রশ্ন একটা থাকে - সে কি জীবতদের সাথেও কথা বলতে পারবে? আমার পক্ষ থেকে উত্তর - "না"৷ সে শুধু মৃতদের সাথেই কথা বলতে পারবে এবং যারা সামনে মরবে তাদেরকে ইনভাইট করতে পারবে 😊।এমন ধারনা সঠিক হলে বা আপনার মনে সন্দেহ জাগাইতে পারলেই আমার পোস্ট সফল হবে। 

আমার বিশ্বাসের কথা জানলেন, আমার নানা মারা গেছে দুই বছর আগে তাও জানলেন - এবার তাহলে পরবর্তী অংশের কথা বলি। ১৬ ই আগস্ট রোজ বৃহস্পতিবার দুপুর বারটা ছয় মিনিটে আমার ফেবুতে একটা নোটিস আসে এই মর্মে যে আমাকে সামওয়ান রিকুয়েস্ট বা ইনভিটেশন পাঠিয়েছে কানেক্ট হওয়ার জন্য৷ সরকার যেভাবে ধরপাকড় করছিল তাতে কে না কে সন্দেহের কারণে রিকুয়েস্ট আসলে তেমন একটা আগ্রহ পাইনা দেখার।এবারও তেমনটাই হলেও ঘন্টা খানেক পর কি মনে করে ঘেটে দেখি আজব কান্ড -" Nana vhai" sent you friend request "।আমি তো থঃ নানা ভাই কাকে ডাকতে আসছে আবার - মনে মনে দুঃখ পেলেও পরে দুঃখ কেটে গেছে এই ভেবে যে মরতে তো একদিন হবেই, নানা ভাই যেহেতু ডাকতেছে দুইভাই একসাথে চলে যাই 😊।আর কানেক্ট হলে তো লস হবে না - নানার খবরাখবর নিলাম সাথে আব্বা কেমন আছে সেটাও ফ্রিতে জেনে গেলাম। 

২০১৪ তে বাবা, ২০১৬ তে নানা, ঠিক দুইবছর পর ২০১৮ তে আমি হলেও খারাপ হবে না। আমার এ ধরার পরিবারের কাছে জোড়গুলো দুঃসংবাদের হলেও আমাদের জন্য হবে পরম আনন্দের। আনন্দ তো শুধু মিলনেই আসে না - অন্যকে খুশি দেখাতেও কত আনন্দ তা সবাই বুঝে না, আমার পরিবারের কাউকে আনন্দে দেখলে আনন্দিত হই আমি। আমার পরিবারের মৃতরা ওপারে আর জীবতরা এপারে যেন আনন্দে থাকে, আল্লাহর নেয়ামতের বরকতে থাকে একটুর দরখাস্ত রেখেই বিদায়-

আল বিদা😐
মরণ ডাকে বুঝি- মরণ ডাকে বুঝি- Reviewed by সার্থান্বেষী on সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৮ Rating: 5

কোন মন্তব্য নেই:

Copyright 2020, All Rights Reserved by Blog Sarthanweshi

Blogger দ্বারা পরিচালিত.