আ্যা জার্ণি টু টিউসান -A journey to tuition
সেই স্কুল লেবেল থেকে নানান ধরনের জার্ণির কথা পড়ার পর আবার পরীক্ষার খাতায় লিখেও এসেছি। বেশ কিছুদিন অন্যের সৃজনশীলতায় ভর করলেও পরে নিজের উপরই ভরসা করতে শিখে গিয়েছিলাম। এরপরও অনেকদিন এই একই জিনিস নিয়ে আকাঝোকা করে চলেছি।
এখন অবস্থানটা একটু ভিন্ন,
এখন আর নিজে লিখিনা অন্যকে লিখাই, নিজের সৃজনশীলতাকে অন্যের মাথায় কপি পেস্ট করে এখন পেট চালাই। সেই পেটচালানোর ইতিহাস নিয়েই আজকের লিখা, "আ্যা জার্নি টু টিউসান"।
মধ্যবিত্ত শ্রেনীর পরিবারের পোলাপানের হাত খরচ চালানোর বা মাঝে মাঝে পেট চালানোর মাধ্যম এই টিউসান। প্রতিদিনের শত কাজ সেরে বিকেল হতেই ছুটে চলে নিত্য ডেসটিনেসান টিউসানের দিকে।
যখন ইন্টার মিডিয়েটে পড়ি তখন থেকেই টিউসান পড়ানোর অভিজ্ঞতা মাঝে দুই বৎসরের গ্যাফ আবার শুরু করি চট্টগ্রামের নামজাদা এক স্কুলের মেধাবী এক শিক্ষার্থীর গাইড হিসেবে।বর্তমানে অবশ্য ঐ ছাত্র আর আমার ছাত্র নাই সে এখন অন্যের। এরপর আমার ছাত্র-ছাত্রীর তালিকায় এসেছিল আরও পাচজনের নাম। এখন আমার মাত্র দুইটাই টিউসান আছে -একটা সকালে আরেকটা বিকেলে। সকাল বিকাল ভাগ করে টিউসান করানোর কারণটা আরেকদিন বলব আজকে অন্য কাহিনী বলি।
১ম টিউসানঃ সকালের টিউসানটা শহরের অদুরে। শহর থেকে মানে আমি যেখানে থাকি তার থেকে ১৫ কি মি দুরে। প্রতিদিন সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে মুখ ধুয়েই ব্যগ নিয়ে রওয়ানা হতে হয় টিউসানের উদ্দ্যেশে ৪৫ মিনিট পর টিউসানে পৌছে স্টুডেন্টকে উঠাই, তারপরের ৫ মিনিট আমার রিফ্রেশমেন্টের জন্য। এরপর স্টুডেন্ট এসে যথাযথ সম্মানপ্রদর্শনপূর্বক সামনে বই নিয়ে বসে। নিত্য কাজ সে করতে বসে -বিখ্যাত ডায়ালগ দিনে কমপক্ষে চারবার তাকে শুনতে হয় "প্রাকটিস মেইকস এ ম্যান পারফেক্ট"।প্রাকটিস শেষে স্যার মাথা উঠিয়ে উত্তরপত্র যাচাই করে আবার সেই বাণী শুনিয়ে বলে যত করবা তত ইস্পাত কঠিন হবা "কর কর"...। এর কিছুক্ষন পর বাচ্চার মা আসে খাবার প্লেট নিয়ে, একটু শাসানো কন্ঠেই শুনতে হয় "আগে খেয়ে নেন ঠান্ডা হয়ে গেলে ভাল লাগবে না"।
পুরোদস্তুর মনোযোগ দিয়ে পরানোর ফাকে হাসিমাখা "ওকে" শুনে মা চলে গেল। এবার আবার প্রাকটিসের পালা আর স্যারের ভোজন। গরম চায়ে চুমু দিতে দিতে স্যার একটু গল্পের তালে ছাত্রকে আনন্দ দিতে ভুলে না কারণ বিদায় বেলায় কাউকে কষ্ট দিতে নাই, লোক মুখে শুনা।
দেন ওয়ালাইকুম সালাম বলে বিদায়�
২য় টিউসানঃ আমার টিউসান যাত্রার দিক বিবেচনা করে কেউ আমাকে ভ্রমনপিয়াসু না বলে থাকলে তা খুব অন্যায় হবে। সকালের টিউসানের কথা বলার পর বিকেলের টিউসানের বর্ণনা দিতে গিয়ে নিজেকে একটু ট্রাবলার ভেবে আনন্দ পাচ্ছি। বিকেলের হাল্কা ঘুম থেকে উঠে টিউসানেরর জন্য প্রস্তুতি নেই, ১.৩০ ঘন্টার জার্ণি বলে কথা। এই টিউসানটা শহরের একদম কেন্দ্রে যেখানে অনেক জ্যাম থাকে।সাজুগুজু করে বের হয়ে গাড়ি চেপে বসেও একঘন্টার একটা ঘুম অনায়াসেই দেয়া যাবে।কিন্তু মানুষের ঘনত্বের কারণে তা আর হয়ে উঠেনা। ঠিক একঘন্টা পর গাড়ি থেকে নেমে ক্লান্ত শরীরটা যখন একটু বিশ্রাম চায় তখন স্যার বসার যাওগাও না পেয়ে বরং হাটার সিদ্ধান্ত নেয়। হাটতে হাটতে নিকটস্থ রেস্টুরেন্ট থেকে স্ন্যাকসটা হালকা সেড়ে নেয় কারণ স্যারের বিশ্বাস পেট খালি থাকলে টিউসানে খাবার দিবে না। তারপর টিউসানের বাসার সদর দরজায় টোকা, বহুত কষ্টকর দরজাটা খোলা সেই চিন্তা থেকে নিজে দরজা না খুলে অল্প কষ্টের টোকা মারে সেটা বরং তার কষ্ট লাগব করে। এরপর ছাত্রের উপস্থিতি, নিত্য কর্ম তার - টেবিলের খালি পানির গ্লাসটা একটু ভর্তি করে আনা। সেটা সে করে খুব আনন্দের সাথেই কিন্তু যেই তাকে পড়ার কথা বলা হয় তার পেটটা হঠাৎ ব্যথা করে উঠে।আবার একটু পর ঠিক ততক্ষনে স্যার তাকে ঐকাজ করা থেকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে।স্টুডেন্টের এমন অভ্যেসে স্যার নিত্য পুরষ্কারের ব্যবস্থা করে। প্রতিদিন তারজন্য থাকে নানান চমক। এই ধরুন, "তিনশ টাকার কথা বললে আরও দুই মিনিট এক্সট্রা কথা বলার সুযোগ। একদিন তাকে একটা টার্গেট দিয়েছিলাম। সে পড়তে চাচ্ছে না কোনভাবেই, উল্লেখ্য কারেন্ট ছিলনা গরম বেশী। পকেটে একটা পালস্ চকলেট(তার প্রিয়) থাকায় হঠাৎ বুদ্ধি আসল একটা পুরষ্কার ঘোষনার। তাকে টার্গেট দেয়া হল সে যদি বিশমিনিটে বিশটা রাইট ফর্ম অব ভার্ব করে দিতে পারে তাহলে সেই চকোলেটটটা তার হবে। সে আনন্দের সাথে টার্গেট নিল। সে আমাকে বলে, "স্যার,আমি ফ্ল্যাইম-৭১ এর মেম্বার আমি টার্গেট নিতে পছন্দ করি"।
সেই সুযোগ হাতছাড়া না করে বররং তা সঠিক সময়ে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে ছাত্র-শিক্ষক দুইজনাই বেজায় খুশী�।
এর কিছুক্ষন পর হঠাৎ ছাত্রের প্রস্থান একটু পরেই চায়ের ট্রে নিয়ে তার আগমন। এ দেখি এক শরীরে বহুরুপ।ছাত্রসাহেব দক্ষতার সাথে খাবার পরিবেশন করেরে এবার পাশে বসে আড্ডা শুরু করলে স্যারও আর আপত্তি করল না। পরবর্তী দিনে আসার ভবিষ্যদ্বানী করে ওয়ালাইকু আস্সালাম বলে প্রস্থান করে শিক্ষক মহোদয়।
এ যাত্রায় এ পর্যন্তই�
আ্যা জার্ণি টু টিউসান -A journey to tuition
Reviewed by সার্থান্বেষী
on
সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৮
Rating:
কোন মন্তব্য নেই: