ই-সিমঃ প্রযুক্তির নতুন চমক

ফটো: অনলাইন থেকে সংগৃহীত


১৮৭৬ সালে আলেক্সান্ডার গ্রাহাম বেলের হাত ধরে টেলিফোন প্রযুক্তির ছোয়া লাগতে লাগতে আজ আধুনিক  যুগে মানুষের অবিচ্ছেদ্য এক অংশে রূপ নিয়েছে৷ সহজেই বহন করার সুবিধার্থে ১৯৭১ সালে মটোরোলার কর্মকর্তা মার্টিন কুপারের হাত ধরে ১৯৭৩ সালে প্রথম মোবাইল ফোন আসে পৃথিবীতে যদিও তা বাজারজাত হতে হতে আর দশ বছর পিছিয়ে ১৯৮৪ করা হয়। 

১৯৮৪ সালে মোবাইল ফোনের ব্যবহার শুরু হলেও আমাদের আজকের এ ফোনের মত সিমকার্ড যুক্ত ফোন আসতে আরও সময় লাগে ৭ বছর। ১৯৭১ সালে প্রথমবারের মত মিউনিখ স্মার্ট কার্ডের অধীনে প্রথম বাজারে আসে সিম কার্ড তথা সাবস্ক্রাইবার আইডেন্টিফিকেশন মডিউল (সিম) কার্ড। সিম কার্ডের তিনটি রূপ এ পর্যন্ত আমরা পেলেও তার কাজের ধরণের কোন পরিবর্তন এ পর্যন্ত দেখা যায় নি। কিন্তু বর্তমানে এম্বেডেড সিমকার্ড (ই-সিম) নামে এক নতুন সিমের ব্যবহার শুরু হয়েছে বিশ্বব্যাপী। 

সিম কার্ড যেমন করে ব্যবহারকারীর পরিচয় বহন করে তেমনি এমবেডেড সিম কার্ড এর ভিতরে আইএম এসআই নাম্বার থাকে এটি সম্পূর্ণ ইউনিক এই নাম্বারে সাবসক্রাইবারকে চেনা যায়।সিম কার্ডে থাকা সকল তথ্যই থাকবে ই-সিমে তবে তা থাকবে built-in তথা একেবারেই সেট করা থাকবে সেটের সাথে অন্যান্য চিপের মতো যা খুলতে হবে না অতএব এত সব আয়োজনের জন্য এমন সিম কার্ডের নাম দেয়া হয়েছে এমবেডেড সিমকার্ড সাধারণত দেখা যাবে না এমনকি বের করতে পারবেনা।

কিছু কিছু ওয়াই ফাই নেটওয়ার্ক যেমন সাইন ইন করে ব্যবহার করতে হয় তেমনি সিমের নেটওয়ার্ক কে ব্যবহার করা যাবে। সাধারণের চেয়ে আকারে ছোট হওয়ায় অন্যান্য চিপ ব্যবহার করা যাবে বেশি এবং সিম কার্ড ঢুকানোর লুপ রাখার সমস্যা না থাকায় খুব সহজেই ওয়াটারপ্রুফ মোবাইল সেট তৈরি সম্ভব হবে।

 মাত্র ছয় মিলিমিটারের একটি চিপ ব্যবহার করার সুযোগ পাওয়া আরো স্লিম ডিভাইস আমাদের উপহার দেয়া যাবে বলেই জানাচ্ছে নির্মাতাপ্রতিষ্ঠানগুলো তবে বিশেষজ্ঞরা বলছে এই ব্যবস্থায় সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাবে যারা দেশে বিদেশে ভ্রমণ করেন তারা ।এ প্রযুক্তির ফলে যে কেউ যেকোনো সময় লগইন করার মাধ্যমে নিজের সিম পরিবর্তন করতে পারবেন। বিরাট ইন চিপের মাধ্যম ব্যবহারের কারণে হারিয়ে যাওয়ার ভয় যেমন নাই তেমনি মোবাইল ফোন হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও ক্ষীণ হয়ে আসছে। হারিয়ে গেলেও এখন কেউ চাইলেই নিজ ইচ্ছায় খুলে ফেলতে পারবে না তাই খুব সহজে হারিয়ে যাওয়া ফোন উদ্ধার করা যাবে।

এখনো পর্যন্ত সারা বিশ্বের সবগুলো দেশে ই-সিম এর ব্যবহার অনুমোদিত না হলেও ৯০ টি দেশের প্রায় ২০০ টি মোবাইল অপারেটর এ সেবা চালু করেছে। সময়ের সাথে সাথে এই ই-সিম সমর্থিত ডিভাইস এর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে যদিও বর্তমানে অল্পকিছু ফোন এবং পরিধানযোগ্য ডিভাইস ই-সিম সমর্থন করে তার মধ্যে অ্যাপল, গুগল ,স্যামসাং এবং মাইক্রোসফট এর কিছু ডিভাইস এই অত্যাধুনিক সেবাটির অনুমোদন করেছে।যদিও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন আগামী পাঁচ বছর পর সারা দিচ্ছে ই-সিম বহুলভাবে ব্যবহার শুরু যাবে।
ই-সিমঃ প্রযুক্তির নতুন চমক ই-সিমঃ প্রযুক্তির নতুন চমক Reviewed by সার্থান্বেষী on জুন ২০, ২০২০ Rating: 5

কোন মন্তব্য নেই:

Copyright 2020, All Rights Reserved by Blog Sarthanweshi

Blogger দ্বারা পরিচালিত.