ভাল অভ্যেস গড়ার চার উপায়-
ভাল অভ্যেস গড়ব, কিন্তু কিভাবে?আমাদের প্রায়ই এমনটা হয় যে আমরা প্রতিদিন ঘুমানোর সময় চিন্তা করি কালকে থেকে সকাল সাতটায় উঠে যাব। বা পরীক্ষার একমাস থেকে আগ থেকেই চিন্তা করতে থাকি যে কালকে থেকে পড়া শুরু করব। কিন্তু দিন শেষে ঐ একটা কথাই আবারও বলা ছাড়া উপায় থাকে না। আমরা পারি না খুব সহজে নতুন একটা অভ্যেস গড়ে তুলতে। তেমন কিছু সমস্যার সমাধান খুজতে গিয়ে যা পেয়েছি তা নিয়েই এ প্রবন্ধ। মুল প্রবন্ধটি ইংরেজী থেকে অনুবাদ ও সংযোজিত।
একটি ভাল অভ্যেস গড়তে হলে চারটি ধাপে আগাতে হবে। বলা হয়ে থাকে এ ধাপগুলে যদি কেউ নিয়মিত করে তবে অল্প সময়ের মধ্যেই কোন ভাল অভ্যেসকে নিজের আয়ত্তে আনা সম্ভব।
★) চারটি অভ্যেসের মাঝে সবার আগে যেটি করতে হবে তা হল খারাপ অভ্যেসগুলোকে চিহ্নিত করা। আমাদের বেশীরভাগ ইচ্ছাই সফল হয়না আমাদের কিছু খারাপ অভ্যেসের কারনে। মনে করুন, আপনি মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলেন আগামীকাল থেকে সকাল সাতটায় ঘুম থেকে উঠবেন, কিন্তু আপনার খারাপ অভ্যেস- রাতে দেরী করে ঘুমানোর কারণে পরিমানমত ঘুম না হওয়ায় চাইলেও আর সকাল সাতটায় ঘুম থেকে উঠা হয়ে উঠে না। তাই মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ভাল অভ্যেস গড়তে হলে আগে খারাপ অভ্যেসগুলোকে বাদ দিন।
★) প্লান করুনঃ যে কাজটাই করতে যাবেন না কেন তার জন্য সবার আগে চাই একটা পরিপূর্ণ পরিকল্পনা। ইংরেজীতে একটা প্রবাদের ব্যবহার এই প্লান বা পরিকল্পনা শব্দটার সাথে সবসময় জড়িয়ে - "Fail to plan plan to fail"। অর্থাৎ আপনি সুন্দর পরিকল্পনা করতে ব্যর্থ হয়েছেন তো সফলতাও ব্যর্থ। সেজন্যই এ প্রবন্ধের লেখক নতুন অভ্যেস গড়ার ক্ষেত্রেও পরিপক্ব একটি পরিকল্পনার কথা স্মরন করেছেন শুরুতেই। খারাপ কাজগুলো সনাক্ত করার পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে প্লান করা, প্লান করার পর প্রতিজ্ঞা -লেগে থাকার, জয়ী হওয়ার। মনে করুন আপনি আগামী পরীক্ষা প্রস্তুতি শুরু করতে চাচ্ছেন আগামীকাল থেকে তারজন্য একটা প্লান করে ফেলতে পারেন এখনই - কতদিনে কোন সাবজেক্ট শেষ করবেন, দিনে কতক্ষণ পড়বেন, কোনদিন কোন সাবজেক্ট পড়বেন, কোন চ্যাপ্টার আগে কোনটা পরে পড়তে হবে এসব যদি আগে থেকেই নির্ধারণ করে রাখা যায় তবে কাজের বহুলাংশই করা হয়ে যায় বলে মত দিয়েছেন একাধিক গবেষক।
★)আস্তে আস্তে শুরু করুনঃ কচ্চপ আর খরগোশের গল্প পড়েনি এমন মানুষ এ সমাজে বিরল। ক্লাস সিক্স থেকে শুরু করে এ গল্প পড়ানো হচ্ছে টুয়ালব তথা ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত। এ গল্পের সারকথা তো এটাই যে-যাই করি তা যেন অল্প অল্প করে করি তবে নিয়মিত যেন হয়। হাদীসের বরাত দিয়ে জানা যায় আল্লাহ সুবহান ওয়া তাআলাও অল্প হোক তবে নিয়মিত ইবাদাত কারীদের বেশী পছন্দ করেন। এ প্রবন্ধের লেখক কাঙ্খিত অভ্যেস গড়তে কাজটি অল্প অল্প করে শুরু করার তাগিদ দিচ্ছেন। উদাহরন হিসেবে বলা যায় - এক ব্যক্তি মনস্ত করল প্রতিদিন সকাল সাতটায় ঘুম থেকে উঠবেন। প্রতিদিন যদি দশটায় উঠার অভ্যেস থাকে তবে সে যেন প্রথমদিন থেকে সাতটায় না উঠে দিনে দিনে পনের মিনিট করে কমিয়ে আনে। প্রতিদিন ধীরে ধীরে পনের মিনিট করে কমতে কমতে একটা নির্দিষ্ট সময় পরে সে হয়ত তার কাঙ্খিত লক্ষে পৌছতে পারবে অনায়াসেই।
★)বাধা সনাক্তকরণ ও সমাধান অনুসন্ধানঃ নতুন কিছু করতে গেলে যদি বাধা না আসে তবে বুঝতে হবে যে আপনি নতুন কোন পথে নেই বরং আগের পথেরই ভিন্ন কোন নামে আছেন। নতুন কিছু শুরু করতে গেলে এটা খুব স্বাভাবিক যে আপনি অনেক অনেক বাধার মুখে পরবেন। নিজেকে অন্যরকম উচ্চতায় নিয়ে যেতে হলে এসব বাধাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার কোন উপায় নেই তেমনি আপোষেরও প্রশ্নই আসে না। নতুনকে জয় করতে হলে সবার আগে জয় করতে হবে বাধাকে। তাই মনোবিজ্ঞানীরা পরামর্শ দেন -বাধাগুলোকে তৎক্ষনাৎ লিপিবদ্ধ করে তা সমাধানের পথ খোজার।
আশা করা যায় কেউ যদি নিয়মিত এই চারটি ধাপে কোন ভাল অভ্যেসের অনুশীলন করতে থাকে তবে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই একটি ভাল অভ্যেস নিজের করে নেয়া যায়।
ভাল অভ্যেস গড়ার চার উপায়-
Reviewed by সার্থান্বেষী
on
সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৮
Rating:
কোন মন্তব্য নেই: