ই-কমার্স বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট



 ইলেকট্রনিক্স, ইন্টারনেট ব্যবহার করে তথ্য আদান প্রদান  করে  ব্যবসা ব্যবসা-বাণিজ্য তথা বিভিন্ন পণ্য ও সেবা ক্রয়-বিক্রয় বলা হয়ই-কমার্স। বর্তমানে একটি বাস্তবতা। মানুষের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় সকল প্রয়োজন যেন ঘরে পসে পায়, সে দায়িত্ব নিয়েছে ব্যবসায়ীরা। এই সেবা পাওয়ার নামই  ই-কমার্স।  ইমেইল ও অনলাইন সার্ভিস ইত্যাদির মাধ্যমে প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে থাকে সাধারণত ই-কমার্স। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে আরেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান,  (বিটুবি) ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে ভোক্তার মধ্যে (বি টু সি) এবং  ভোক্তা থেকে ভোক্তার মধ্যে (সি টু সি) এই তিনটি কাজ পরিচালিত হয় ই-কমার্সে। 1969 সালে কম্পিউসার্ভ নামে একটি ইন্টারনেট ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান যাত্রার মাধ্যমে শুরু হয় ই-কমার্সের সূচনা। পরবর্তীতে হাজার 1979 সালে মাইকেল অলড্রিন অলড্রিন মাই ইলেকট্রনিক শপিং এর উদ্বোধন করেন এবং সেটিকেই আধুনিকতার আনুষ্ঠানিক যাত্রা বলা যায়। পরবর্তীতে 1995 সালের জনপ্রিয় সাইট অ্যামাজন এবং 1999 সালের আলিবাবা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন যাত্রা শুরু হয়ে যায়। সেই থেকে শুরু হয়ে আজ পর্যন্ত তার জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ই-কমার্স ও বাংলাদেশ

2008 সালের নির্বাচনের প্রাক্কালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথা প্রচার করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে ক্ষমতায় আসে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই প্রেক্ষিতে ভিশন- ২১ ঘোষণা করেন। যেখানে বলা হয়েছে 2021 সালের মধ্যে দেশকে ডিজিটালাইজড করে সকল সেক্টরকে ইন্টারনেট ভিত্তিক করে দেশের সকল জনগোষ্ঠীকে ডিজিটাল বাংলাদেশের আওতায় নিয়ে আসা। বর্তমান সরকার সফলতার সাথে সেই ভিশন বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন যে ডিজিটাল বিপ্লব কোন অলীক কল্পনা নয় বরং বাস্তব।
 বিংশ শতকের শেষভাগে উন্নত দেশগুলোতে ডিজিটাল বিপ্লব শুরু হলেও একুশ শতকে এসে তার উন্নয়নশীল অধিকাংশ দেশে ছড়িয়ে পড়ে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির এই সম্প্রসারণ ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষেত্রে আধুনিকতার নতুন নতুন রুপ  নিয়ে এসেছে।  বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তির সুবিধা গ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। তাই ই-কমার্সের সম্প্রসারণের সুযোগ বেড়েছে। এর মধ্যে দেশে বেশ কয়েকটি ই কমার্স সাইটস অনলাইন কেনাকাটার বিষয়টি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। সারাদেশে প্রায় সাড়ে চার হাজারের বেশি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার রয়েছে। এগুলোর  সুবিধা নিয়ে কৃষক তার সকল পণ্য বিক্রয় করতে পারেন। এতে তারা ব্যাপক লাভবান হবেন। 
বাংলাদেশ অনেকগুলি ই-কমার্স সাইট রয়েছে। যেমনঃ
rokomari.com priyoshop.com, আজকেরডিল প্রতিষ্ঠান তাদের ব্যবসা পরিচালনা করছে সম্পূর্ণ ইন্টারনেট ভিত্তিক।
দেশে এই কমার্স কর্মকাণ্ড দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিমাসে নতুন সাইট তৈরি হচ্ছে। যদিও এ খাতের বর্তমান অবস্থান এবং ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির সঠিক সংখ্যা সম্পর্কে খুব একটা গবেষণা পরিচালিত হয়নি। তবে সম্প্রতি প্রকাশিত এক  রিপোর্টের প্রতিবেদন প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশে ই-কমার্স খাত ব্যাপক উন্নতি করছে। ওই রিপোর্টের ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী প্রতি বছর কমপক্ষে 10% বৃদ্ধি পাবে।
2016 সালে বাংলাদেশের ই-কমার্স খাতে 72 শতাংশ প্রবৃদ্ধি ঘটেছে যা বাংলাদেশে ই-কমার্সের ইতিহাসে অত্যন্ত আশাপ্রদ অগ্রগতি। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান মতে জানুয়ারি সেপ্টেম্বর 2016 তে মোট 3.59 বিলিয়ন টাকা ই-কমার্সের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে যা 2015 সালে 2.16 বিলিয়ন টাকা ছিল। ডেবিট কার্ডের চেয়ে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের সংখ্যা অধিক। এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা 60 মিলিয়ন এর অধিক যা দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় এক তৃতীয়াংশ। শুধুমাত্র ইন্টারনেট এবং বাণিজ্য সম্পর্কিত মৌলিক জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে ই-কমার্সে ব্যবসা পরিচালনা করা যায়।
বর্তমান কোভিড ১৯ পরিস্থতির বিশ্লেষণে বলা যায়, আগামী বিশ্বের বাণিজ্য ই-কমার্স ভিত্তিতে শতভাগ পরিচালিত হবে। সে সম্ভাবনা অমূলক নয়।


চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় 
ই-কমার্স বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট ই-কমার্স বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট Reviewed by সার্থান্বেষী on জুন ২৩, ২০২০ Rating: 5

কোন মন্তব্য নেই:

Copyright 2020, All Rights Reserved by Blog Sarthanweshi

Blogger দ্বারা পরিচালিত.