ঈশতি'র গল্প - "অপেক্ষার প্রহর"

রাত যখন ১২টা তখন তুরাজ বারান্দায় বসে হুমায়ুন আহমেদ স্যারের অপেক্ষা বইটি পড়ছিল, হঠাৎ বইটি পড়া শেষ হলে সে এক পলকে চাঁদের দিকে তাকিয়ে রইলো। আর নিজেই নিজেকে বলল, অপেক্ষা আসলে যে কতটা কষ্টের তা আমার থেকে ভালো কে ই বা বুঝবে। এরপর সে তার রুমে ঢুকে টেবিল থেকে একটি ডায়েরি এবং একটি ছবি বের করে  (ছবিটিতে তার সাথে একটি মেয়ে ছিল) কান্না করতে করতে লিখে  "I am a  failure".  

লেখকের সব লেখা এখানে

এর পর সে শুয়ে শুয়ে চিন্তা করে তার অপেক্ষা কি কোন দিনও শেষ হবে না। পর দিন সকালে সে নামাজ পড়ে তার অফিসে চলে যায়। এর কিছু দিন পর তাকে বদলি করে দেওয়া হয় আমেরিকার নিউইয়র্ক শহর এ। সে তা জানার পর থেকেই তার মধ্যে একটি অদৃশ্য অনুভূতি কাজ করছিল। কারণ সেই  শহরের সাথে তার ছিল অনেক গভীর সম্পর্ক।কিন্তু তুরাজের বাবা মা তাকে সেখানে যেতে দিবে না, তাও সে অনেক কষ্টে তাদের বুঝিয়ে তাদেরকে. নিয়েই সেখানে যায়।
সে সিদ্ধান্ত নেয় যে সে মেয়েটিকে খুঁজে বের করবেই কিন্তু তার ভয়ে ছিল যে সে কি পারবে নাকি, কারণ তার কাছে সেই ছবি আর মেয়েটির নাম ছাড়া কিছুই ছিল না। সে অনেক কষ্ট করে খোঁজার জন্য,পারে না। প্রায় এক মাস পর,,,
সেদিন বাসায় তুরাজের বাবা মা ছিল না, সে তার বাবা মার রুমে ঢুকে আলমারিতে অনেক খোঁজাখুঁজির পর একটা কাগজ খুঁজে পায় আর সেই কাগজ থেকে এমন একটা জায়গার নাম পায় , যেটা তার আশা বাড়িয়ে দেয়, আসলে সেটা ছিল একটি এতিমখানার ঠিকানা। সে যায় ওই এতিমখানায় এবং তাহা নামের মেয়েটির কথা জিজ্ঞেস করে কিন্তু সেখানে কর্মীরা কিছু বলে নাই। সে অনেক চেষ্টা করে কিন্তু কিছুই হয় না। এরপর সে তার পরিচয় তা দেয় যে সেও এইখানেরই একটা বাচ্চা ছিল তাও কিছু হয় না। পরে সে হতাশ হয়ে চলে আসে। এরপর থেকে সে সবসময়ই সেখানে যেতো।

লেখকের সব লেখা এখানে

একদিন তুরাজ আবারও সেখানের  অন্য একজনের সাথে কথা বলতে গেলেই সে দেখে একটি মেয়ে ওই মানুষটিকে জিজ্ঞেস করছে, "আপনি কি আহান নামের ছেলেটি সম্পর্কে কিছু বলতে পারবেন" কিন্তু মেয়েটি ও কিছু জানতে পারল না এবং সেখান থেকে চলে যায় আর তুরাজ অপলক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে থাকে। এর পর মুহূর্তেই তুরাজ মেয়েটির পিছনে দৌড়ে যায় এবং জিজ্ঞেস করে  ( বাংলাতে) "ছেলেটি আপনার কে হয় ?" মেয়ে তাকে ইংরেজিতে বলে." Who are you? " তখন তুরাজ  তাকে তাহা বলে ডাকে এবং পকেট থেকে সেই ছবিটি বের করে তাকে দেখায়
আর মেয়েটি কান্না কান্না গলায় ভাইয়া বলে ডেকে তুরাজকে জড়িয়ে ধরে..
এভাবেই  দুই ভাইবোন দুইজনকে খুঁজে পেতে সফল হয়।

লেখকের সব লেখা এখানে 

 আহান (তুরাজ)  তাহা আর তাদের বাবা মা বাংলাদেশী ছিল কিন্তু তারা চার জনই ছিল আমেরিকার নাগরিকত্ব প্রাপ্ত।  তাদের বয়স যখন ৫ কিংবা ৭ তখন তাদের বাবা মা মারা যায় এবং আমেরিকার সরকারি নিয়ম অনুযায়ী তাদের দাদা দাদী রা থাকা সত্ত্বেও তাদের কে এতিমখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। আর দুজনকে আলাদা পরিবারে দিয়ে দেওয়া হয়।
কিন্তু খুব ছোট বেলায় তাদের কে এইটা সম্পর্কে বলে তাদের বাবা মা এবং এও বলে যে যদি এমন হয় তাহলে যেনো তারা তাদের দুই জনকে খুঁজে বের করে......
এইভাবেই প্রায় ২৫বছর পর তারা আবার একসাথে হয়....

লেখকের সব লিখা এখানে
- Esrat Jahan Eiste 
-12 th grade student 
- Bangladesh Navy College Chattogram


ঈশতি'র গল্প - "অপেক্ষার প্রহর" ঈশতি'র গল্প - "অপেক্ষার প্রহর" Reviewed by সার্থান্বেষী on জুন ২৭, ২০২০ Rating: 5

কোন মন্তব্য নেই:

Copyright 2020, All Rights Reserved by Blog Sarthanweshi

Blogger দ্বারা পরিচালিত.